স্বদেশ
গভীর ঘুমের থেকে ডেকে তোলে স্নিগ্ধ নদীতীর
কাকচক্ষু দীঘিজলে আ-গোড়ালি ডুবে যায় পা
আকস্মিক স্মৃতিপটে হানা দেয় বুভুক্ষু মানুষ
গাড়ির সাইটগ্লাসে ক্রমশ পিছোতে থাকা যুবতীর মুখ।
রোজকার চেনা এই কংক্রীটে বিমনা দাঁড়ালে
পায়ের আঙুল বেয়ে জেগে ওঠে হিমে ভেজা ঘাস
নিঃশ্বাস আচ্ছন্ন করে সোঁদা মাটি শিশিরের ঘ্রান
কপাল মুছতে গিয়ে দুখানি হলুদমাখা থমকানো হাত -
চোখ জুড়ে ভেসে ওঠে কাকতাড়ুয়ার ধানক্ষেত
অজরা বৃদ্ধের সেই মৃত্যুকামী নিশ্চিন্ত বিদায়
উপযুক্ত ভবিষ্যতে অতীতের সে উত্তরাধিকার
সে অনাদি সন্ধেবেলা, মন্দিরের ঘন্টাধ্বনি, অলৌকিক দীপ।
হৃৎপিন্ড খুঁড়ে চলে নৌকাভরা গ্রামের কিষাণ
খাদ্যহীন বস্ত্রহীন ঝুপড়িবাসী নিরুপায় চোখ
পঁচিশ পয়সায় কেনা মাটির গেলাস ভরা জল
টালির ইস্কুল ঘরে প্রবল ব্যক্তিত্বময়ী অঙ্কদিদিমণি।
শৈশব আকীর্ণ করা স্নেহময়ী আঁচলের টান
প্রথম বিদ্যুৎ দেখা অভিভূত বার্ধ্যক্যের হাসি
হাফপ্যান্ট বালকের অবাধ পুকুরে দাপাদাপি
রামায়ণ যাত্রাপালা, তপস্বীনী সীতার সে অনিবার্য গান।
আবীর, তুলসীপাতা, হলুদ, সিঁদুর আর ঝরা কাশফুল
ব্যাস্ততম মুহূর্তেও সমস্ত অস্তিত্ব চিরে ধুলোমাটি ডাক
অমোঘ সে আহ্বানে শিউরে ওঠে ধমনীপ্রবাহ
পারিপার্শ্ব তুচ্ছ করে কুয়োতলা ফিরে আসে প্রবাসী হৃদয়।
(শেষ দুটো লাইন এভাবে ও লেখা যেতো -
পারিপার্শ্ব তুচ্ছ করে ফিরে আসে শাহরুখ খান
আশুতোষ এভাবেই নবীনতম সিনেমা স্বদেশ বানান।)
No comments:
Post a Comment